সভাপতি দুটি কথা

ঐতিহ্যবাদী বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সকল বিজ্ঞ সদস্য/ সদস্যদেও আমার আনৱরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই। আইনজীবী সমিতির সকল সদস্যদেও পরিচিতি স্মরনিকা বের করতে যাচ্ছে। ইহাতে আমি বর্তমান কমিটিকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রতিষ্ঠান ও সদস্য পরিচিত স্মরনিকা সকল বিজ্ঞ সদস্য/ সদস্যাদেও আমার হৃদয়ের গভীর থেকে আনৱরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
শেখ আবদুল কাদের
এডভোকেট
সভাপতি
বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতি
বরিশাল।

শুভেচ্ছা বানী
বরিশাল ঐতিহ্যবাদী জেলা আইনজীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বিজ্ঞ সদস্যবৃন্দেও সমন্বয় ঘটানোর জন্য প্রতিষ্ঠান ও সদস্য পরিচিতি স্মরনিকা প্রকাশের আয়োজন করি। কার্যকারী কমিটির সদস্যবৃন্ধ কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে একখানা প্রতিষ্ঠান ও সদস্য পরিচিতি স্মরনিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আমার জানামতে সকল তথ্য এবং সমিতির রেজিষ্টার ও খাতাপত্র পর্যালোচনা অনেৱ নির্ভুল ভাবে প্রকাশের আপ্রান চেষ্টা করেছি। সমিতির বিজ্ঞ সকল সদস্যবৃন্দ ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি সহসী উদ্যোগ নিয়েছি হয়তো কিছু ভূল-ক্রটি হতে পাওে সেজন্য বিজ্ঞ সকল সদস্যবৃন্দ ৰমা সুন্দও দৃষ্টিতে দেখবেন। জিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লৰ্যে বিজ্ঞ সকল সদস্যবৃন্দকে নতুন বৎসরের সুখ-সমৃদ্ধি কামনা কওে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি।
ফয়জুল হক ফয়েজ
সম্পাদক
বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতি
বরিশাল।

সংক্ষিপ্ত ইতিবৃত্তঃ বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতি
-মানবেন্দ্র বটব্যাল, এডভোকেট

আজকের বরিশাল বিভাগ অর্থাৎ বৃহত্তর বরিশাল জেলা ১৭৯৭ সনের আগ পর্যনৱ ছিল ঢাকা জেলার অধীনে। ১৭৯৭ সনে বাকেরগঞ্জ (বরিশাল) জেলা ম্যাজিষ্ট্রেসি জন্য পৃথক জেলা হিসাবে ঘোষনা করা হয়। তবে ১৮০১ সনের আগে বরিশালে কোন প্রকারের আদালত স’াপিত হয়নি। বরিশাল কালেক্টরেটের (বর্তমানকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়) জন্ম হয় ১৮১৭ সনে। ১৮৬১ সনে বাকেরগঞ্জ জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও কালেক্টরের পদ একীভূক্ত করা হয়। বাকেরগঞ্জ জেলার সীমান নিধারন করে ১৮৭৪ সনের ১৬ সেপ্টেম্বও গেজেট প্রকাশ করা হয়। আর বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির জন্ম হয় ১৮৮০ সনের ১৭ জুন।১৮৮৭ সনে বাকেরগঞ্জ জেলাকে ৫টি মহকুমায় বিভাক্ত কওে সেখানে ৫ জন মহকুমা ম্যাজিষ্ট্রেট নিযুক্ত করা হয়। তাই প্রথমে বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতিই জেলার সকল মামলার আইনজীবী নিযুক্ত হবার সুযোগ পেলেও পরবির্ততে মহকুমা পর্যায়েও আইনজীবী সমিতি গঠনের প্রক্রিয়া শুরম্ন হয়। এসময়ে মহকুমা ছিল পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ভোলা, দৰিন শাহাবাজপুর ও মাদারিপুর। তৎকালীন জেলা জজ ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মিঃ এফ,জে,জি ক্যাম্বেলের সভাপতিত্বে স’ানীয় পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে একজন ব্যারিস্টার এট ল’ সহ ২৯ জন উকিল ও পস্নীডার, ৭ জন মোক্তার এবং জেলা জজ, দুজন সাব জজ ও ৪ জন সুন্সেফ ছিলেন বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির প্রতিষ্টাতা সদস্য। ওই দিনের সভায় বরিশালের কয়েকজন জমিদারও উপসি’ত ছিলেন। সে সময়ে বিচার কার্যক্রমের সাথে সংযুক্ত সরকারী কর্মকর্তারাও সমিতির সদস্য হতে পারতেন। বিচারদেও জন্য কোন ভর্তি ফি ছিলনা। তবে তাদারকে মাসিক নির্ধারন চাঁদার সাথে বাৎসরিক ওকালতনামার ফি দিতে হতনা। পরবর্তিতে আইনজীবী সমিতির পূনাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির সভাপতি হন জেলা জজ ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মিঃ এফ,জে,জি ক্যাম্বেল ও সম্পাদক নির্বাচিত হন বিট্রিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠন অনুশীলন পার্টিও নেতা মিঃ পি,এন, মিত্র ব্যারিস্টার এট-ল। কমিটিতে পদাধিকার বলে সদস্য হন সরকারী কৌশুলী মিঃ অভয়ানন্দ দাস। পরবর্তিতে আইনজীবী দেও মধ্যে প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হন পিয়ারী লাল রায়(লাকুটিয়ার জমিদার পরিবারের সদস্য।)
ঊাংলার গর্ভনর ১৮৭৮ সনের ২২ জুলাই বিভিন্ন আদালতে আইনপেশায় নিয়োজিত পিস্নডার ও মোক্তারগন সরকারী জমিতে নিজস্ব ভবন নির্মান করতে পারবে মর্মে ৯৪৫ বি নং আদেশ জারী করেন। ওই আদেশের প্রেৰিতে বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির পৰ থেকে জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গনে আইনজীবী সিমিতির ভবন নির্মানের জন্য জমির বরাদ্দ চেয়ে ১৮৮৬ সনের ৫ জুন সরকারের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির আবেদনটি বাংলার গর্ভনরের পৰে গনপূর্ত বিভাগের সচিব ১৮৯১ সনের ১ এপ্রিল ৭৯৬ বি নং স্মারকের পত্রের মাধ্যমে মঞ্জুর করেন। আর সরকারের কাছ থেকে অনুমতি পাবার পর প্রথমে আইনজীবী সমিতির ৪১ জন সদস্য ১৯০০ সনের ২০ জুলাই তারিখে রেজিষ্ট্রিকৃত ২৭৩৭ নং দলিল দ্বারা সরকারের কাছ থেকে কিছু জমি স’ায়ী ইজারা নেন। উলেস্নখ্য সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে একমাত্র মুসলিম সদস্য মৌলভী মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী(শেওে বাংলা এ.কে ফজলুল হকের পিতা) ১৯০১ সনের ৯ ফেব্রম্নয়ারী ইনেৱকাল করেন। তিনি প্রতিষ্টাতা সদস্য হলেও অসুস’তার কারনে তিনি ইজারা দলিল সম্পাদন করতে পারেন নি। প্রথমে যে জমি আইনজীবী সমিতির বরাবরে ইজারা দেয়া হয়েছিল তাতে স’ান সংকুলার না হওয়ার আইনজীবী সমিতির আবেদনের প্রেৰিতে সরকারের পৰ থেকে আরো কিছু জমি অধিগ্রহন করা হয়। আর আইনজীবী সমিতির তৎকালীন ৭৪ জন সদস্য ১৯০৩ সনের ১৫ জুন তারিখে রেজিষ্ট্রিকৃত ২৬৭৯ নং দলিল সম্পাদন কওে অধিগ্রহনকৃত জমি স’ায়ীভাবে ইজারা নেন। দ্বিতীয় দলিলে আইনজীবী সমিতির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে মরহুম হেমায়েতউদ্দিন আহমেদ (খান বাহাদুর হেমায়েতউদ্দিন আহমেদ)এবং এ.কে ফজলুল হকও (শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক) স্বাৰরকারী ছিলেন। আর এভাবে আইনজীবী সমিতির পৰ থেকে জমি অর্জনের পর সমিতির নিজস্ব ভবন নির্মান করা হয়। জানা যায় ওই সময়ে জমির উপর সমিতির নিজস্ব ভবন নির্মান হয়। এই ভবনটির ছাদটি ফেলে দিয়ে বর্তমান ঢালাই ছাদ হয়েছে ১৯৮৪ সনে। সমিতির দ্বিতীয় ভবনটি মূল ভবেনর পূর্বে পাশের দোতলা দালান )নির্মান করা হয় ১৯৭৭ সনে। এটির ভিত্তি প্রসৱর স’াপন করেন তৎকালীন বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য মরহুম আলহাজ্ব মোবারক হোসেন(সমিতির সাবেক সভাপতি ইউনুফ হোসেন হুমায়ুনের পিতা)। তৃতীয় ভবন নির্মান করা হয়। ১৯৯৬-৯৭ সনে(পিছনের তিন তলা দালানটি)। আইনজীবী সমিতি গঠনের পর আইনজীবীদেও কল্যানের জন্য গঠন করা হয়েছিল আইনজীবী সমবায় সমিতি। এটির কার্যক্রম পরিচালিত হত সমিতির সর্ব উত্তোরের দালানে। এখন এই সমবায় প্রতিষ্ঠানটির নেই বললেই চলে।
শহীদ আবদুর বর সেরনিয়াবাদ ভবন
বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতি গঠনের সময়ে ৭ জন মোক্তার ও আইনজীবী সমিতির সদস্য ছিলেন।মোক্তারগনের আইন বিষয়ের কোন সনদপত্র ছিলনা (ল.পাশ) বা স্নাতক শ্রেনী পাশের প্রয়োজন ছিলনা। যেহেতু, তারা আদালতে আইনপেশার সুযোগ না পেলেও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট সহ সব ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আইনপেশায় নিযুক্ত ছিলেন। এ কারনে শুরম্ন থেকেই আইনজীবী সমিতির সদস্য থাকলেও তাদেও পৰে পৃথকভাবে বসায় স’ান নিয়ে সংকট দেখা দেয়। পওে তারা জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এখন যেটি পুলিশ সুপারের অফিস সেই ভবনে সমিতির কার্যক্রম শুরম্ন করেন। ১৯১৩ সন পর্যনৱ ওই ভবনেই মোক্তার সমিতির কার্যালয় ছিল। পরবর্তীতে সরকার ওই ভবটিতে পুলিশ সুপারের কার্যালয় স’াপনের সিদ্ধানৱ নেয়। এসময়ে মোক্তারগন পরেন বিপাকে। জেলা প্রশাসনের সাথে দেখা কওে সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানানো হলেও পথমে বিশেস কোন কাজ হয়নি।জেলা প্রশাসক ও মোক্তারগনের বসায় জন্য পৃথক ব্যবস’া করতে না পারায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যক্রম শুরম্ন করতে পারছিল না। শেষে পর্যনৱ জেলা প্রশাসক মোক্তারদেও জন্য জেলা কালেক্টরের অফিসের (বর্তমান বরিশাল জাদুঘরের জন্য নির্ধারন ভবন) দৰিন পাশে পুলিশের সেন্ট্রি পোষ্ট হিসাবে ব্যবহৃত একটি কৰ মোক্তারগনকে সাময়িকভাবে ব্যবহার করার অনুমতি দেয়। কিন’ এই কৰটি অত্যনৱ ছোট হওয়ার মোক্তারগনের কার্যালয় নিয়ে সমস্যার সমাধন হয়নি। মোক্তারগন আবার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তথা জেলা কালেক্টরের(জেলা প্রশাসক) সাথে দেখা করে স’ায়ী ভবন পাবার জন্য আলোচনা শুরম্ন করেন। ইতোমধ্যে ১৯১৪ সনে শুরম্ন হয় প্রথম বিশ্বযু্‌দ্ধ।আর বিশ্বযদ্ধেও ডামাডোলে আলোচনা বদ্ধ হয়ে যায়। বিশ্বযুদ্ধ সিৱমিত হয়ে গেলে ১৯১৮ সনে আবার মোক্তারগন তাদেও জন্য স’ায়ী ভবন বরাদ্দের দাবি করতে থাকেন। ১৯২৫ সনে সরকারের অনুমতি নিয়ো জেলা প্রশাসক গনপূর্ত বিভাগের মালিকানাধীন পুলিশের পরিত্যাক্ত গান হাউজটি মোক্তার সমিতির সদস্যদেও ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ করে। মোক্তার সমিতির সভাপতি আর,সি সেনের সভাপতিত্বে ০৪/০৮/১৯২৫ ইং তারিখে অনুষ্ঠিত সভায় জেলা প্রশাসনের প্রসৱাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। অবশেষে ভারত সরকারের পৰে তৎকালীন জেলা কালেক্টর ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মিঃ ইউ বস্ন্যান্ডি ও মোক্তার সমিতির সম্পাদক দিনেশ চন্দ্র চক্রবর্তীর মধ্যে ১৯২৫ সনের ৩১ আগষ্ট একটি চুক্তিপত্র সম্পাদন হয়। এই চুক্তিপত্রটি ০২/০৯/১৯২৫ ইং তারিখে রেজিষ্ট্রি করা হয়।।এসময়ে ভবনটি ও জমির মূল্য নির্ধারন করা হয় ৬,০০০/-টাকা । বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সরকার মোক্তারি পরীৰা বন্ধ করে দিয়ে মোক্তারি পেশাকে রহিত করার আইন প্রণয়ন করে এবং ১৯৭৪ সনে বার কাউন্সিলে একটি সাধারন মৌখিক পরীৰা নিয়ে সব মোক্তারদেরকে এডভোকেট হিসেবে গন্য করে নেয়। ১৯৭৬ সনে বরিশাল মোক্তার সমিতি বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সাথে একীভ’ত হয়। মোক্তার সমিতি কর্তৃক ব্যবহৃত আধাপাকা ভবনটিতে এডভোকেটগনও বসা শুরম্ন করেন। কিন’ মোক্তার সমিতি কর্তৃক ব্যবহৃত আধাপাকা অতি পুরাতন ভবনটি পূর্ন মালিকানা মোক্তার সমিতির না থাকায় আইনজীবী সমিতির পৰে এটির বিশেষ কোন উন্নয়ন করা ও সম্ভব হচ্ছিলনা। অপরদিকে গনপূর্ত বিভাগ ভবনটি দখল ত্যাগ করার জন্য জেলা আইনজীবী সমিতিকে পত্র দিলে দেখা দেয় সমস্যা। আর এ সমস্যা নিরসনের জন্য ১৯৮৯ সনে জেলা আইনজীবী সমিতিরা সিদ্ধানেৱর প্রেৰিতে আইনজীবী সমিতির তৎকালীন সম্পাদক বাদী হয়ে ওই ভবন ও তৎসংলগ্ন জমি থেকে সরকার বা গনপূর্ত বিভাগ যাতে আইনজীবীদেও উচ্ছেদ করতে না পাওে তার জন্য বাংলাদেশ সরকার,গনপূর্ত বিভাগ সহ অণ্যদেরকে বিবাদী কও পে্রথম সাবজজ (যুগ্ম জেলা জজ)আদালতে ১৯৮৯ সনের ৫৪ নং দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন। সমিতির সদস্য মানবেন্দ্র বটব্যালকে সমিতির পৰে মামলাটি পরিচালনার দায়ত্ব দেয়া হয়। ২০০১ সনে মামলাটির বিচার কার্যক্রম শুরম্ন হলে সমিতির তৎকালীন সম্পাদক কামরম্নল আহসান সাহিন,মরহুম এডভোকেট খান মোফাজ্জেল হোসেন, প্রয়াত সদস্য কেশব চন্দ্র দাস (তিনি মোক্তার হিসাবে আইন পেশা শুরম্ন করলেও ক্রমান্বয়ে বি,এ, এম,এ ও ল’ পাশ করে বার কাউন্সিলে নিয়মিত পরীৰা দিয়ে এডভোকেট হয়েছিলেন)সমিতির পৰে মামলাটিতে স্বাৰী দেন। সরকার ও গনপূর্ত বিভাগের পৰ থেকে মামলার প্রতিদ্বন্ধিতা করা হয়। শেষে পর্যনৱ তৎকালীন প্রথম সাবজজ মিঃ সত্যেন্দ্র নাথ ঘোষ ২৫/০২/২০০১ ইং তারিখে আইনজীবী সমিতির অনুকূলে রায় ডিক্রী প্রদান করেন। সতিরি অনুকূলে মামলার রায় ডিক্রী হবার পর জরাজীর্ন আধাপাকা ভবনটির পরবর্তীতে নতুন বহুতলা দালান নির্মানের কাজ শুরম্ন করা হয়। ২০০১ সনে একতলা ভবন নির্মান হলে আইনজীবী সমিতির সভায় সর্বসম্মতভাবে ১৯৭৫ সনের ১৫ আগাষ্টে আইনজীবী সমিতির প্রবীন সদস্য তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাতের নামাকরনে ভবনটির নামাকরন করার সিদ্ধানৱ নেয়া হয়। আর ভবনটির উদ্ধোধন করেন তারই পুত্র জাতীয় সংসদেও তৎকালীন চীফ হুইপ জনাব আবুল হাসানাত আবদুলস্নাহ।
সামাজিক সংস্কৃতি ৰেত্রে সমিতির অবদানঃ-
১৯০৯ সনের ১৫ মার্চ ইটালী ও সিসিলি দ্বীপে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়। সমিতির পৰ থেকে ভূমিকম্প ৰতিগ্রস’দেও সাহাযার্থে ৫০/- টাকা অনুদান পাঠানো হয়। ১৯১০ সনে এদেশে রেফ্রিজারেটর আসেনি। তাই রেগীদেও কোন কোন ঔষদ সংরৰনের জন্য বরফের জন্য বরর্ফেও প্রয়োজন হত। সে সময়ে সমিতির পৰ থেকে হাসপাতালে প্রতিদিন দুইমন বরফ কিনে দেয়া হত। নাবালিকাদেও পতিতাবৃত্তি থেকে রৰার জন্য ১৯১১ সনে সমিতির উদ্যোগে বাসৱব পদৰেপ নেয়া হয়। বরিশাল পৌরসভা বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য ওয়াটার ট্রিটমেন্ট পস্নান্ট (আমানতগঞ্জে এখন এটি পরিত্যক্ত অবস’ায় রয়েছে) স’াপনের জন্য আর্থিক সাহায্যেও আবেদন জানালে সমিতির পৰ থেকে ১৯১২ সনে ২৫০/- টাকা অণুদান দেয়া হয়। ১৯১৫ সনের ২৭ জুলাই ত্রিপুরা ও নোয়াখালীর দুঃস’ মানুষের সাহায্যেও জন্য ৩০০/- টাকা সাহায্য করা হয়। ব্রিটিশ সরকার তাদের সাম্রাজ্যকে অৰুন্ন রাখার অংশ হিসেবে পাজ্ঞাবের জালিয়ানাওয়ালা বাগে নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটায়। এঘটনার প্রতিবাদে বিশ্ব কবি রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর তার নাইট উপাধি ত্যাগ করেছিলেন। এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে সমগ্র ভারতব্যাপী শুরম্ন হয় আন্দোলন। এই আন্দোলন পরিচালনার জন্য ১৯২০ জালিয়ানাওয়ালা বাগ তহবিলে সমিতির পৰ থেকে ১০০/- টাকা চাদা দেয়া হয়। ১৯২১সনে করিমগঞ্জ ও সিলেটের ৰতিগ্রস’ কুলিদেও সাহায্যেও জন্য ১০০/- টাকা চাঁদা দেয়া হয়। একই বছওে ধর্মঘটি স্টিমার ও ফ্লাট কর্মচারীদেও সাহায্যেও জন্য ৫০০/- টাকা সাহায্য করা হয়। ভারতের স্বাৰীনতা আন্দোলন পরিচালনার জন্য ১৯২৫ সনে দেশবন্ধু চিত্ত রঞ্জন তহবিলে ১২৫/- টাকা চাঁদা দেয়া হয়। দৰিনাঞ্চলের তৎকালীন একমাত্র আধুনিক চিকিৎসা কেন্দ্র বরিশাল সদও হাসপাতালে একটি এক্স-রে মেশিন কেনার জন্য ১৯৩২ সনে ৫০০/- টাকা সাহায্য দেয়া হয়। তারপরে ও ১৯৫০ সনে জেলার সম্প্রাদায়িক দাঙ্গা দিলে সমিতির পৰ থেকে দাঙ্গা প্রতিরোধ উদ্যোগ নেয়া হয়। ১৯৬০, ১৯৬১, ১৯৬৫, ১৯৭০ সনে ও তারপরেও দেশের বিভিন্নস’ানে ঘুর্নিঝড় ,বন্যা দেখা দিলে সমিতির পৰ থেকে কিছু অর্থ সাহায্য দেয়া হয় ও সমিতির সদস্যরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৪ সনের দর্ভিৰের সময়ে সমিতির সদস্যরা বার্ষিক ভোজের সম্পূর্ন টাকা দুভিৰ পীড়িত মানুষের মধ্যে বিতরন করে। সমিতির সদস্য মরহুম এডভোকেট হেমায়তেউদ্দিন আহমেদ নিজ তহবিলের ১৫ লৰ টাকা দিয়ে বরিশাল ডায়াবেটিশ হাসপাতালের জন্য জমি কিনে দিয়েছেন। যেখানে এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এডভোকেট হেমায়েতউদ্দিন ডায়াবেটিশ হাসপাতাল। অপরদিকে পূর্ববাংলায় একটি প্রকৌশলী বিদ্যালয় প্রতিষ্টার লৰ্যে১৯০১ সনের ১৮ ডিসেম্বও সমিতির পৰ থেকে আর্থিক অনুদান দেয়া হয়। ১৯০৮ সনে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের আইন কলেজগুলো বন্ধ করে একটি কেন্দ্রীয় আইন কলেজ স’াপনের সুপারিশ করলে সমিতির পৰ থেকে ওই সুপারিশের প্রতিবাদ জানানো হয়। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় পরীৰার বাড়ানোর সিদ্ধানৱ নিলে ১৯১৯ সনের ৫ আগষ্ট ওই সিদ্ধানেৱর প্রতিবাদে জানায় হয়। বরিশালে একটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠান জন্য সমিতির পৰ থেকে ১৯২৫ সনের ৫ ফেব্রম্নয়ারী ১০০০/- টাকা অণুদান দেয়া হয়। ১৯২৬ সনে বরিশাল পাবলিক লাইব্রেরীকে আরো সমৃদ্ধ করার জন্য অনুদান দেয়া হয়। বরিশাল নগরীর একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র অশ্বিনী কুমার হল নির্মানের জন্য সমিতির পৰ থেকে ৯০০/- টাকা চাঁদা দেয়া হয়। এছাড়া সমিতির সদস্যরা বরিশাল নগরী সহ জেলার বিভিন্ন শিৰা প্রতিষ্ঠানের সদস্য নির্বাচিত হয়ে ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে শিৰা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্টা করে শিৰা বিসৱারে তাদেও পালন করেছেন ও কওে আসছেন। অবশ্য দ্‌্িবতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী কাল থেকে সমিতির পৰ থেকে সামাজিক কাজে অনুদান দেবার প্রবনতা কমে যায়। তারপরও মরহুম হেমায়েতউদ্দিন আহমেদ নিজ তহবিলের ২০ লৰ টাকা দিয়ে জেলার দরিদ্র জনগোষ্টীয় মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের শিৰা গ্রহনে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য এডভোকেট হেমায়েতউদ্দিন এডুকেশন ট্রাস্ট গঠন করেছেন। এই তহবিলের টাকা থেকে আইনজীবীদেও যোগ্য সনৱানেরা ও আথির্ক সহায়তা পাচ্ছে। তিনি নিজ তহবিলের টাকা দিয়ে বরিশাল ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন গঠন করেছেন। এখানে কম খরচে হৃদরোগীরা চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন। অন্যদিকে শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাদ ট্রাস্টেও পৰ থেকে আইনজীবীদেও মেধাবী সনৱানদেও লেখা পড়ায় উৎসাহ দেবার জন্য বৃত্তি দেয়া হচ্ছে। তার পুত্র বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও জাতীয় সংসদেও সাবেক চীফ হুইপ আবুল হাসানাত আবদুলস্নাহ ট্রাস্টেও প্রাথমিক টাকা দিলেও ট্রাস্টেটি আইনজীবীদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। সমিতির অপর সদস্য আলহাজ্ব আবদুস ছত্তার হাওলাদার তার মৃত্যুতে পর বার কাউন্সিলের বেনোভোলন্ট ফান্ড থেকে তার পরিবারের সদস্যরা যে টাকা পাবেন তাদিয়ে একটি ট্রাস্ট গঠন করেছেন। অবশ্য এখন পর্যনৱ এই ট্রাস্টেও কার্যক্রম শুরম্ন হয়নি।সমিতির পৰ থেকে আগে নিয়মিত বার্ষিক নাটক করা হত। এসব নারী চরিত্র সমিতির সদস্যরাই অভিনয় করতেন। এখন আর সে ধরনের উদ্যোগ নেয়া না হলেও সমিতির পৰ থেকে প্রতি বছর শরদীয় প্রীতি সম্মিলনে সংগীতানুষ্ঠান সহ অপরাপর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।

রাজনীতিতে ও দেশ পরিচালনায় আইনজীবী সমিতির অবদানঃ
অবিভক্ত ভারতবর্ষেও রাজণীতে আইনজীবী বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দিতেন। বরিশালেও তার ব্যতিক্রম ছিলনা। বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতি যেসব সদস্যের জন্য গর্ব বোধ করে তাদেও শীর্ষে রয়েছেন আধুনিক বরিশালের রূপকার ও সমাজ সংস্কারক, ব্রজমোহন বিদ্যালয় এবং ব্রাজমোহন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত ও অবিভক্ত বাংলার কৃষকদেও জনপ্রিয় রাজনীবিদ কৃষক শ্রমিক প্রজা পার্টিও প্রতিষ্ঠাতা ১৯৮৬ সনে অবিভূক্ত বাংলার মূখ্যমন্ত্রী ও পাকিসৱান সৃষ্টির পর পূর্ব বাংলায় ২১ দফা কর্মসূচীর ভিত্তিতে ১৯৮৪ সনের অনুষ্ঠিত নির্বাচনের সময়ে গঠিত যুক্তফ্রন্টের অন্যতম নেতৃত্ব দানকারী নেতা বিজয়ী যুক্তফ্রন্ট সরকারের সময়কাল গর্ভনর শেওে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক। তিনি ১৯০৩-০৪ সনে সমিতির সহ- সম্পাদক ও ছিলেন। সমিতির সদস্য জনাব আজিজউদ্দিন আহমেদ তদানিনৱন পাকিসৱানের সংবিধান কমিশনের সদস্য ছিলেন। জনাব খান বাহাদুর হাশেম আলী খান ১৯৩৭-৪৬ সনে অবিভক্ত বাংলার আইন সভায় সদস্য ও কৃষি মন্ত্রী ,বাকেরগঞ্জ জেলা বোর্ডেও সভাপতি ও নিজে জমিদার হয়েও জমিদারী প্রথা উচ্ছেদের জন্য গঠিত কমিশনার সদস্য হয়ে যোগ ভূমিকা পালন করেন। সমিতির সদস্য জনাব আবদুল ওহাব খান পাকিসৱান জাতীয় পরিষদেও স্পীকার ছিলেন। জনাব আবদুল জব্বার খান প্রথমে হাইকোর্টের বিচারপতি ও পরে পাকিসৱান জাতীয় পরিষদের স্পীকার নির্বাচিত হয়েছিলেন। মিঃ যোগেন্দ্র নাথ মন্ডল অবিভক্ত বাংলার মন্ত্রী, পাকিসৱানের কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। জনাব মোহম্মদ হোসেন চৌধুরী ভারতবর্ষেও ভাইসরয় কাউন্সিলের সদস্য ও বাকেরগঞ্জ জেলা বোর্ডেও চেয়ারম্যান ছিলেন। মরহুম শাহ নজিবুল হক, মরহুম আবদুর রব পাকিসৱান জাতীয় পরিষদেও সদস্য ছিলেন। মিঃ রাধিকা রঞ্জন গুহ, জনাব আবদুর রহমান সৈয়দ জিয়াউল করিম সুপ্রীম কোর্টেও বিভাগের বিচারপতি ছিলেন। বর্তমানে ও সমিতির সাবেক সদস্য জনাব সৈয়দ জিয়াউল করিম সুপ্রীম কোর্টেও হাইকোর্ট বিচারপতি রয়েছেন। সমিতির সাবেক সভাপতি মরহুম এম,শামসুল আলম ১৯৫২ সনের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে নেতত্ব দেন ও পরবর্তিতে সরকারিভাবে ভাষা সৈনিক হিসেবে স্বর্ন পদক দেয়া হয়। মরহুম হেমায়েত উদ্দিন আহমেদ চট্রগ্রামের ভাষা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন।
সমিতির সদস্য জনাব আবদুর রব সেরনিয়াবাত বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী থাকাবস’ায় ১৯৭৫ সনের ১৫ আগস্টেও কালো রাতে শহীদ হন। ওই সময়ে তার বাসভবনে উপসি’ত সমিতির নবীন সদস্য জনাব শহীদ সেরনিয়াবাদও (শহীদুল ইসলাম) ঘাতকদেও গুলিতে প্রান হারিয়ে শহীদ হন। জনাব নরম্নল ইসলাম মঞ্জুর ও জনাব শাহজাদা আবদুল মালেক খান বাংলাদেশ সরকারের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। বর্তমানে জনাব জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রতিমন্ত্রী হিসাবে রয়েছেন। মরহুম আবদুর বারেক রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। নব্বইয়ের দশকে সমিতির সাবেক সভাপতি বরিশাল পৌরসভার চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সরকারের পাটমন্ত্রী ও পূর্ব পাকিসৱান পরিষদেও শিৰা বিষয়ক পার্লামেন্টারি সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন শেষে জনাব আবদুর রহমান বিশ্বাস দেশের রাষ্ট্রপতি হয়ে সমিতির সম্মানকে আরো বাড়িয়েছেন। বরিশাল সিটি কর্পোরেশন গঠিত হবার পর প্রথম নির্বাচনে জনাব মজিবর রহমান সরোয়ার মেয়র নির্বাচিত হন। তিতি বর্তমানে বরিশাল সদও উপজেলা নিয়ে গঠিত জাতীয় সংসদ সদস্য। দ্বিতীয় নির্বাচনে জনাব শওকত হোসেন হিরন মেয়র নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। জনাব তালুকদার মোঃ ইউনুছ গৌরনদী আগৈলঝাড়া উপজেলা সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় সংসদেও সদস্য নির্বাচিত হয়ে দেশ পরিচালনায় যথাযর্থ ভূমিকা রাখছেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে সমিতির অপরাপর বহু সংখ্যক সদস্য আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
১৯০৪ সনের ১১ জানুয়ারি বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন শুরম্ন হলে আইনজীবী সমিতি দৃঢ় ভূমিকা পালন করে। ১৯১৯ সনে কলকাতা হাইকোর্টেও ব্রিটিশ বিচারগন আদালতের ভাষা ইংরেজী হবে মর্মে সিদ্ধানৱ ঘোষনা করলে ৪ মার্চ ব্যবহারের দাবি জানানো হয়। ব্রিটিশ বিচারক মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগী আন্দোলন সমালোচনা করলে ১৯২১ সনের ১২ জুন সমিতির ২৮ জন আইনজীবীর বিরম্নদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা শুরম্ন হয়। আইনজীবীরা আদালতে ৰমা না চেয়ে মামলার প্রতিদ্বন্দিতা করেন এবং শেষে পর্যনৱ কলকাতা হাইকোর্ট পর্যনৱ লড়ে সসম্মানে মুক্তি পান। ১৯৩৩ সনে সমিতির সভায় আন্দামানে দ্বীপানৱরিত রাজনীতিবিদ দের দেশে ফিরিয়ে আনায় দাবি জানিয়ে সর্ব সম্মত সিদ্ধানৱ নেয়া হয়। ভারতবর্ষেও স্বাধীনতার দাবিতে সমিতি ভবনে অনুষ্ঠিত হয় আসাম -বাংলার আইনজীবীদেও যৌথ সভা। সভায় সভাপতিত্ব করেন সমিতির সদস্য ও বাংলা আইনসভায় সদস্য মিঃ হিরালাল দাস এবং জনাব ওবায়দুল হক। ১৯৫২ সনে বাংলাকে পাকিসৱানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসাবে দাবি জানানোর সাথে সাথে ২১ শে ফেব্রম্নয়ারীর নৃশংস হত্যাকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ জনানো হয় সমিতির পৰ থেকে । পাকিসৱান আমলে আইউব খানের সাময়িক শাসনের প্রতিবাদে ১৯৬৯ সনের গনআন্দোলনের সময়ে আইনজীবী সমিতির সদস্যগন জনতার নেমে আদালতে ব্যবহৃত আইনজীবীদেও পোষক পরিধান করে বিৰোভ মিছিল করেন।
১৯৭১ সনে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধেও আইনজীবী সমিতির একাধিক গুরম্নত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেছেন। পাকিসৱানী হানাদার বাহিণী ১৯৭১ সনের ২৬ মার্চ দেশে হত্যাযজ্ঞ শুরম্ন করলে বরিশালে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের একটি অস’ায়ী সচিবালয় প্রতিষ্টা করা হয়। এই সচিবালয়ে সমিতির বেশ কয়েকজন সদস্য সক্রীয় দায়িত্ব পালন করেন। তারা হলেণ মরহুম আমিনুল হক চৌধুরী,মরহুম হেমায়েতউদ্দিন আহমেদ, জনাব নুরম্নল ইসলাম মঞ্জুর, শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত, মরহুম হাসান চৌধুরী, মরহুম সামছুল হক, জনাব ইউনুফ হোসেন হুমায়ুন, বর্তমান সংসদ সদস্য জনাব আমির হোসেন আমু, মরহুম সরদার জালালউদ্দিন। পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধে জনাব নুরম্নল ইসলাম মঞ্জুর নবম সেক্টরের বেসামরিক প্রধান, শহীদ আবদুর সেরনিয়াবাত দৰিন বাংলার মুক্তিযোদ্ধাদেও আঞ্চলিক সমন্বয়কারী, আগরতলা ষড়যন্ত্রেও মামলায় গুলিবিদ্ধ ফ্লাইট সাজেন্ট মরহুম ফজলুল হক নবম সেক্টরের সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় প্রধান, জনাব ওবায়দুল রহমান মোসৱাফা, মরহুম আবদুল করিম সরদার, এএফএম হেমায়েত উদ্দিন আহম্মেদ. এরহুম সরদার জালাল উদ্দিন ,মুজিবুর রহমান তালুকদার, খান আলতাফ হোসেন ভুলু, বিচারপতি খান আলতাফ হোসেন অরম্নন, আবুল কাশেম (কমান্ডার), মিঃ তপন কুমার চক্রবর্তী, তোফাজ্জেল হক (খোকা), চৌধুরী (কমান্ডার), ফজলুল হক (কমান্ডার), স্বপন কুমার দত্ত, আবদুল মালেক রাঢ়ী, আব্দুল হাই, এমদাদুল হক খান, নাসির উদ্দিন খান বাবুল, এস এম ইকবাল,নজরম্নল ইসলাম চুন্নু, নিবন্ধলিখক, তালুকদার মোঃ ইউনুছ, খলিফা সাইদুর রহমান সহ অপরাপর আইনজীবীগন (স্মৃত শক্তির অভাবে যাদের নাম এই মুহুর্তে মনে পড়ছেনা) প্রত্যৰভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। অণ্যান্য সদস্যদের সর্ম্পকে তথ্য না জানায় আরো যদি কেউ মুক্তিযোদ্ধা হয়ে থাকেন তাদের নাম উলেস্নখ করতে না পারায় ৰমা চাচ্ছি। অপরদিকে সমিতির সদস্য শহীদ সুধীর কুমার চক্রবর্তী শহীদ রায় বাহাদুর ললিত কুমার বল, শহীদ জীতেন্দ্র দত্ত মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়ে আমাদেরকে গৌরবান্বিত করছেন। এখানে উলেস্নখ্য যোগ্য বরিশালের তৎকালীন প্রথম সাব জজ এন,এন দাসও মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে আলৌকিকভাবে বেচে গিয়েছিলেন প্রয়াত মিহির লাল দত্ত। সমিতির সদস্য প্রয়াত উপেন্দ্র নাথ চ্যাটার্জী, প্রয়াত প্রমোদ কুমার াসেনগুপ্ত, শহীদ জীতেন্দ্র লাল দত্ত তাদের পুত্র সনৱানদেরকে হারিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে। মুক্তিযোদ্ধেও সময়ে নির্যাতনের হন জনাব আবদুছ হত্তার হাওলাদার, সরদার জালাল উদ্দিন। আবার দেশের স্বাধীনতার পর সস্ত্রীসীরা প্রান কেড়ে নেয় মরহুম সরদার জালাল উদ্দিন ও মরহুম সৈয়দ হোসাইন আলী সরদার। আবার সমিতির মুষ্টিমেয় কয়েকজন সদস্য বৃটিশ সরকাওে পদলেহনও করেছেন। এখন আর তাদের নামগুলো আমি উচ্চারন করতে চাইনা।
শেষ করার আগের কথা
১৩০ বছরের পুরানো বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির ইতিহাস লেখা খুবই কঠিন বিষয়। তবুও আমি চেষ্ঠা করেছি তথ্য নির্ভও থাকতে। সব বিষয়ে বিশদ বিবরন দেওয়া ও সময়ের অভাবে সম্ভব হয়নি। আশা করি ভবিষ্যতে কোন ইতিহাস প্রিয় ব্যক্তি বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির একটি পূর্নাঙ্গ ইতিহাস লেখায় উদ্যোগী ভূমিকা নেবেন। আর এধরনের তার প্রমান পাওয়া যাবে। এই সংৰিপ্ত লেখায় অনেক সদস্যেরই যথাযথ মুল্যায়ণ করা সম্ভব হয়নি। তবে সেটা আমার ইচ্ছাকৃত অপরাধ নয়। সময়ের অভাবেও অন্যতম কারন।
শেষ করার আগে আরেকটি তথ্য দিয়ে শেষ করছি। সমিতি ১৯৮০ সনে অত্যনৱ জাকজমকের সাথে শতবর্ষ উদযাপন করেছে। বাংলাদেশে সুপ্রীম কোর্টেও তৎকালীন প্রধান অতিথি হিসেবে উপসি’ত ছিলেন মরহুম বিচারপতি আবদুর রহমান চৌধুরী বিশেষ অতিথি ছিলেন বিচারপতি সুলতান হোসেন খান, অতিথি বক্তা ছিলেন তৎকালীণ জেলা জনাব এইচ, কে আবদুল হাই, তত্ববধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা জনাব মাইনুল হোসেন ব্যরিস্টার এট,ল খোন্দকার মাহবুবউদ্দিন আহমেদ, বার কাউন্সিলের কার্যকারী কমিটির সোবাহান,সাধারন সম্পাদক জনাব খোন্দকার মাহবুবউদ্দিন আহমেদ, বার কাউন্সিলের কার্যকারী কমিটির তৎকালীন সভাপতি জনাব খোন্দকার মাহবুব হোসেন। শতবর্ষ উপলৰে সমিতির পৰ থেকে একটি স্মরনিকা প্রকাশিত হয়েছিল।
তথ্যসূত্রঃ
১। ১৯৮০ সালে শতবর্ষ উপলৰে প্রকাশিত স্মরনিকা সম্পাদনায়ঃ এডভোকেট আবদুল মালেক মুন্সী, শতবর্ষ কালে সমিতির সম্পাদক ছিলেন।
২। বাকেরগঞ্জ জেলার ইতিহাস-হেনরি বেভারেজ।
৩। বাকেরগঞ্জ বিভাগের সিরাজউদ্দিন আহমেদ।
৪। বিভিন্ন রেজিষ্ট্রিকৃত দলিল।
৫। আদালতের মামলার রায়।
৬। সমিতির সিদ্ধানৱ বই।

যোগাযোগ

ঠিকানা: ফজলুল হক এভেনিউ, বরিশাল।

টেলিফোন : 02478863466

  ইমেইল : barishalbara2z@gmail.com

শেয়ার লিংক

Solverwp- WordPress Theme and Plugin